মনোয়ারা পারভিন, কমলগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি:
রাত পোহালেই বর সবাইকে নিয়ে কনেকে আনতে যাবেন। বরের হাতে মেহেদিও পরানো হয়ে গেছে। রাত তখন ৩টা বাজে। হঠাৎ পুরো পরিবেশ বদলে যায়। বরের ভাবি আয়েশা বেগম (৪০) হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। আয়েশা বেগম ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বুধবার সিজারিয়ানের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ছিল। মায়ের সঙ্গে গর্ভে থাকা সেই সন্তানও মারা গেছে। মুহুর্তেই বিয়েবাড়িতে বিষাদ নেমে আসে। কান্না আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
গত মঙ্গলবার ৫ আগস্ট দিবাগত রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পতনঊষার ইউনিয়নের ধোপাটিলা গ্রামে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে।
মৃত আয়েশা বেগম উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের আরব-আমিরাত প্রবাসী লাল মিয়ার স্ত্রী। আয়েশা বেগম তিন সন্তানের জননী। মঙ্গলবার তাঁর চতুর্থ সন্তান পৃথিবীতে আসার কথা ছিল।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের ধোপাটিলা গ্রামের প্রবাসী যুবক আনসার মিয়ার বিয়ের দিন ছিল আজ বুধবার। বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে মঙ্গলবার রাতে সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ছিলেন। এর মধ্যে রাতে বড় ভাই লাল মিয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আয়েশা বেগমের শরীরে অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক শর্ট লাগে।
এর কিছুক্ষণ পর তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। পরিবারের সদস্যরা মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আয়েশা বেগম ও তাঁর গর্ভের সন্তানকে মৃত ঘোষণা করেন। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনার পর বিয়ের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
এদিকে স্ত্রী ও গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রবাস থেকে স্বামী লাল মিয়া দেশে আসছেন। দেশে আসার পর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় বাসিন্দা ফটিকুল ইসলাম রাজু বলেন, ঘটনার পর বিয়ের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। দাফনকাজ সম্পন্ন শেষে হয়তো বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হবে।
আয়েশা বেগমের চাচা শ্বশুর ইসমাইল মিয়া বলেন, আমরা কী বলব কোনো ভাষা নেই। আয়েশা বেগমের স্বামী দেশে আসার পর জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।