আবদুর রউফ আশরাফ।।
ঈদ মানে কেবল নতুন জামা, মিষ্টি খাবার আর ছুটির দিন নয়—ঈদ মানে ভালোবাসা, সংহতি আর আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার উৎসব। দীর্ঘ এক বছর পর আত্মত্যাগের মহিমান্বিত এই পবিত্র উৎসব, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সমাজে সবাই মিলে বাঁচাটাই সবচেয়ে বড় শক্তি।
ঈদের দিনের সকাল শুরু হয় ঈদের নামাজ দিয়ে, এরপর কোলাকুলি আর শুভেচ্ছা বিনিময়। কিন্তু এই আনন্দ যেন সীমাবদ্ধ না থাকে কেবল নিজের পরিবারের মধ্যেই। ঈদের প্রকৃত আনন্দ আসে তখনই, যখন আমরা সেই হাসি পৌঁছে দিতে পারি এমন কারও মুখে, যাদের হয়তো ঈদ মানেই আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতই।
অনেক পরিবারই আছে, যারা অভাবের কারণে ঈদের দিনেও সন্তানের জন্য নতুন জামা কিনে দিতে পারে না। পথশিশু, বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা, কিংবা কর্মজীবী দরিদ্র মানুষজন—তাদের জন্য ঈদ যেন এক স্বপ্নের নাম। আমরা যদি আমাদের সামান্য আনন্দও তাদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে পারি, তবে সেটিই হবে ঈদের প্রকৃত তাৎপর্য এবং আনন্দ।
একটি নতুন জামা, এক প্লেট সেমাই, অথবা শুধু কিছু সময় ও ভালোবাসা—এগুলোই হয়তো কাউকে ঈদের দিন একটু বেশি হাসিখুশি করে তুলতে পারে। ঈদ আমাদের শেখায়, খুশি তখনই খাঁটি হয়, যখন তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
এই ঈদে আসুন, আনন্দ ভাগ করে নিই। পরিবারের বাইরে গিয়ে হাত বাড়াই প্রতিবেশীর দিকে, সহকর্মীর দিকে, এমনকি অচেনা পথচারীর দিকেও। কারণ ঈদ শুধু উৎসব নয়, এটি একটি মানবিক আহ্বান—একসাথে ভালো থাকার, একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর।
ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে আনন্দ ও সম্প্রীতির বড় অভাব। এবারের ঈদ তা ঘোচাবে বলে আশা করা যায়। ঈদের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে নেবে, এটাই প্রত্যাশা। সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা।
ঈদ মোবারক!